ভাবি যখন বউ পর্ব ৪

Header Ads

ভাবি যখন বউ গল্প

পর্ব ৪


হঠাৎ করে নিলার কথা'টা শুনেই মিরার বুকটা কেমন  যেন ফাকা ফাকা মনে হলো। মিরা হয়তো ভাবলো, কাব্যও কি হারিয়ে যাবে তাএ জীবন থেকে ? আবার মিরা নিজেই নিজেকে ধিক্কার দেয়। ধুর ! কি ভাবছি এসব আমি ? কাব্যে'র প্রতি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি না তো আমি । না না এটা কি করে সম্ভব ?


ভাবি যখন বউ গল্প



আমি নিশান ছাড়া আর অন্য কাউকে একটুও ভালোবাসতে পারবো না । একমাত্র নিশানই আমার ভালোবাসার জগত জুরে আছে । আর কেউ না। এমনকি কাব্যও না।


মিরা : হয়েছে। আর খাবো না।


কাব্য : খাবে না মানে, এগুলো তাহলে  কে খাবে ?


মিরা : তুমি খাবে।


কাব্য : না না আমি একা খাবো না। আমার সাথে তোমাকেও খেতে হবে বুঝলে।


মিরা : আমি আর খাবো না, Please !


কাব্য : ঠিক আছে, তাহলে আমি খাবার রেখে আসছি।


মিরা : খাবার রেখে আসবে কেনো ? তুমি খাবে না ?


কাব্য : না ! তুমি যখন খাবেইনা তাহলে আমিও খাবো না।


মিরা : আমি বললাম তো আমার পেট ভরে গেছে । কাব্য রাগ করো না তুমিও খেয়ে নাও please ।


কাব্য : উমম, খেতে পারি তবে একটা শর্ত !


মিরা : কিহ ? শর্ত! কি শর্ত ? ( একদম অবাক হয়ে বললো মিরা )


কাব্য : যদি তুমি খাইয়ে দাও তাহলে খাবো।


কথাটা শুনেই মিরা হঠাৎ করে চমকে উঠলো। দুই ভাই এর  মাঝে এতো মিল কেন ? প্রতিটা কাজেই যেন একে অপরের একদম প্রতিরুপ। নিশানও ঠিক এই একই কাজটা করতো। ওকে আমার প্রায়ই খাইয়ে দিতে হতো। আমি নিশান'কে যতটাই ভুলে থাকতে চাই, ততটাই যেন নিশান আমার কাছে চলে আসছে। আমিতো ইচ্ছা করে নিশানকে ভুলতে চাইনি। আমি  নিশান এর স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। কিন্তু, আম্মু তো আমাকে প্রতিজ্ঞা করিয়েছেন আমি যেন নিশানকে ভুলে যাই আর  কাব্যকে আমার আপন করে নিই। কিন্তু, আমি কি করে করবো এটা ? আমি যে শুধু নিশানকেই ভালোবাসি আর কাব্য'তো নিলাকে ভালোবাসে। আমি জানি আমার নিশান ফিরে আসবে, আর তা খুব শ্রীঘ্রই।


কাব্য : আচ্ছা লাগবে নাহ । আমি যাচ্ছি ।


( একথা বলেই আমি উঠে চলে আসতে ছিলাম, এমন সময়ই মিরা আমার হাত ধরলো আর বলল )


মিরা : না না বসো। আমিই তোমায়  খাইয়ে দিচ্ছি।


তখনই আমি মিরার দিকে তাকালাম আর মিরাও আমার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে। মিরা আমার হাত ধরে আছে বলে সে একটু লজ্জাই পেলো। আমার হাত ছেড়ে দিয়ে নিচ দিকে তাকিয়ে নাস্তাগুলো ওর কাছে নিলো মিরা।


কাব্য : না লাগবে না। মিরা তুমি শুয়ে বিশ্রাম করো। আর তোমার যখন ভালো লাগছে না তখন আমায় খাইয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই ।


মিরা : আমি কখন বললাম যে, আমার ভালো লাগছে না ? ( মিরা আস্তে করে বললো নিচের দিকে তাকিয়ে )


কাব্য : না । অবশ্য তুমি বলোনি। তবে আমি বুঝতে পারছি, তোমার ভালো লাগছে না…


অতপর, মিরা কিছু সময় নিরব থাকার পর বললো,


মিরা : কথা না বলে বসো এখানে। আমি তোমায় খাইয়ে দিচ্ছি।


তখন আমি আর একটা কথাও বাড়ালাম না। বসে পড়লাম খাওয়ার জন্য । মিরা খাবার তুলে আমার মুখের সামনে এনে তুলে ধরলো। আর আমি গপ গপ করে মুখে নিয়ে নিলাম। আর মিরা কি যেন মনে করে ফিক করে হেসে দিলো। আর আমিও মিরার দিকে তাকিয়ে হেসে দিলাম।


কাব্য : আচ্ছা, একটা কথা বলি ?


মিরা : হুমম, বলো।


কাব্য : আচ্ছা, তোমার ঐ গেজা দাত'টা তো আগে কখনও দেখি নি। হাসলে খুব সুন্দর লাগে তোমায়।


"আমার এই কথাটা শুনেই মিরা চোখ তুলে তাকালো আমার দিকে। মিরা আসলে ভেবে পায়না। আমাদের দুই ভাই এর মধ্যে এতো মিল কি করে হতে পারে ? দুই ভাই এরভাবনা একে অপরের ভাবনার সাথে পুরোপুরি মিলে যায় কিভাবে ? নিশানও প্রতিবারই আমাকে আমার হাসির কথা বলতো। 

আর সে সাথে আমার ঐ দাতটার কথাও বলতো। আর এখন কাব্যও একই কথা বলছে। কাব্য আমাকে নিশান এর কথা ভুলাতে চাইছে অথচ, বারবার শুধু নিশানের কথাই মনে করিয়েই দিচ্ছে। তবে কাব্য তুমি আসলেই খুব ভালো। মিরা পলকহীন দৃষ্টিতে তাকায় কাব্যের দিকে।"


( মিরা সেই কখন থেকে কি একটা যেন ভেবেই চলছে, এই মেয়েটা শুধু চিন্তাতেই মগ্ন থাকে )


কাব্য : ধুর ! তোমাকে না বলছি চিন্তা না করতে ? তবুও তুমি সব সময় ভাবুক হয়ে থাকো তুমি।


মিরা : So Sorry । আসলে…

( আমি মিরাকে আটকে দিলাম )


কাব্য : হয়েছে আর  বলা লাগবে না। তুমি যাও শুয়ে পড়ো এখন। আমি নিচে এগুলো রেখে আসতেছি।


মিরা এবার মাথা নাড়িয়ে বললো,


মিরা : ঠিক আছে…


"তারপর আমি রুম থেকে বেরিয়ে সোজা নিচে গেলাম। থালা-প্লেট গুলো রেখে আসলাম রান্নাঘরে। রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখলাম আম্মু নিচে আসছে।


মা : কাব্য।


কাব্য : বলো আম্মু।


মা : মিরা কোথায় ?


কাব্য : রুমে শুয়ে আছে এখন । বিশ্রাম নিতে হবে না ? তাই ।


মা : হুমম বেশ। মেয়েটার ভালো করে খেয়াল রাখিস বাবা। হারিয়ে গেলে কিন্তু পস্তাতে অনেক হবে।


আমি মুচকি হাসি দিয়ে বললাম,


কাব্য : চিন্তা করো না আম্মু। আমি আছি তো তাইনা।


আম্মুও একটা অর্থ-পূর্ণ হাসি দিলো।


"এদিকে মিরা বালিশে হেলান দিয়ে এক খেয়ালে শুয়ে আছে। মিরা জানালার দিকে তাকিয়ে শুধু  বাহিরের দৃশ্য দেখছে আর ভাবছে,  কাব্য কিভাবে বুঝে নেয় যে, আমি ভাবছি ? কি একটা আশ্চর্য ক্ষমতা ছেলেটির। নাহ, কাব্যের সামনে আর কখনও ভাবা যাবে না। পরে আবার কাব্য রাগ করতে পারে।

মিরার এখন নিশান এর  কথা খুব মনে পড়ছে। মিরা কাঁদতেও পারছে না ভয়ে। কাব্য যদি রাগ করে বসে। আবার আম্মুর সাথেও পতিজ্ঞা করেছে। কিন্তু, ভিতরে ভিতরে একদম পুড়ে যাচ্ছে মিরার। মিরা তখনই এক হাত তার পেটের উপর রাখলো। মিরা বাবুকে ছুঁয়ে দিচ্ছে। আজ  নিশান থাকলে হয়তো এমন করেই ছুঁয়ে দিতো। কোথায় গেলো নিশানটা ? নিশান এতটাই নিষ্টুর হয়ে গেলো। ও কি জানে না যে, ওকে ছাড়া ওর মিরা নামের থাকতে পারে না। টপ টপ করে চোখ থেকে দুই ফোটা পানি পড়লো মিরার।"


এদিকে আম্মুর সাথে কথা বলে আমি রুমে আসলাম আর  দেখলাম মিরা শুয়ে আছে পেটে হাত দিয়ে।


কাব্য : বাবুটা কি আস্তে আস্তে বড় হয়ে যাচ্ছে ?


হঠাৎ আমার কন্ঠ শুনেই মিরা কেন যেন চমকে উঠলো। হাত সরিয়ে নিলো তাড়াতাড়ি করে । লজ্জা পেয়েছে অনেক । তখন আমি গিয়ে বিছানায় বসলাম।


কাব্য : বললে না তো!


মিরা আমার দিকে তাকালো আর বললো


মিরা : না, এমনি।


কাব্য : এমনি কি ?


মিরা : নাহ , এমনি হা হাত রেখেছিলাম । ( মিরা  লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে বললো )


কাব্য : হুমম। আচ্ছা শুনো আমি একটু এখন বাইরে যাচ্ছি। ফিরতে একটু দেরি হবে। তুমি বিশ্রাম করো কেমন। উঠবে না কিন্তু একদম ।


"আমার কথায় মিরা মাথা নাড়ালো। তারপর আমি আমাদের রুম থেকে বেরিয়ে আম্মুর রুমে গেলাম"


কাব্য : আম্মু আমি একটু বের হচ্ছি ।


মা : কোথায় যাচ্ছিস তুই এখন ?


কাব্য : বাজারে যাবো, একটু দরকার আছে। একটু দেরি হবে।


মা : আচ্ছা বাবা যা , আর শুন যত তাড়াতাড়ি পারিস বাড়ি ফিরিস কেমন ।


কাব্য : হুমম ঠিক আছে মা।


 এ কথা বলেই আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম।

পথেই আমার Girlfriend নিলার সাথে  ৪র্থ পর্ব শেষ


আরও পড়ুন : ভাবি যখন বউ পর্ব ৫ পড়তে এখানে ক্লিক করুন …


আরও পড়ুন Vivo Latest Mobile Phone 2021


Post a Comment

Previous Post Next Post

Google Ads

Next Part Google Ads